বাংরিপোসিতে দুরাত্তির ১
কেন্দুপাতার জঙ্গল অব্দি ট্রেন যায় না, ভাগ্যিস!
চারজোড়া বর-বউ’র মধ্যিখানে, তুমি দ্বাদশ ব্যক্তি।
বাংরিপোসিতে হাওয়া উঠেছে, বসন্তের হাওয়া
পিঠে একখান ছুরি খেয়ে, আমি দাঁড়িয়ে আছি
তোমাদের অভ্যর্থনা জানাবো বলে, এই জঙ্গলে
আমার রক্তবিন্দু অনুসরণ করে তোমরা উঠো ওয়াচ টাওয়ারে;
জানো, দেড়শ বছর আগেও কলিকাতা শহরে বাঘ বেরুত!
উঠতি কবিরা আবার শক্তি-সুনীল নকল করে
মুশকিল এই, সিমি গারওয়েল বা মহুয়া সর্বত্র সুলভ নয়।
নখ খোঁটা ও হাসিতে নকল হাসি মেশানো ছাড়া,
তুমি কি কফিও তৈরি করছ? হাইগুলো লুকাও কোথায়?
ঐ যে ঘন গাছ দাঁড়িয়ে আছে নীরবে, ওর তলে বোসো।
দেখো, তাকে বেড় দিয়ে বয়ে যাচ্ছে চিরকালীন সোঁতা...
বাংরিপোসিতে দুরাত্তির ২
নদীটির দেখা পেলে?
বাংরিপোসি কি তোমায় হারিয়ে যেতে বলছে?
এখানে একদা বিপ্লব ঘটেছিল ধুন্ধুমার
এখন কেবলই স্মৃতি-সর্বস্ব। মরণোত্তর।
হাত রেখো গাছের বাকলে। দীর্ঘক্ষণ।
মিনিটে কতবার গাছের হৃৎস্পন্দন?
হয়ো একা। জংলা পথের মতো সহসা বিরল
এনো কিছু বীজ। মুঠোয় যতটুকু ধরে জল।
আমাদের রুখাশুখা শহরে গজাবো বিস্তীর্ণ জঙ্গল।
পেয়েছ দেখা? সাক্ষাৎ হলো কি তোমার সনে?
জেনো, নিজের দর্শন মেলে নিভৃত নির্জনে...
দ্যখো, ঐ আমার মরদেহ ভেসে যাচ্ছে, বুড়ীবালামের জলে।
বাংরিপোসিতে দুরাত্তির ৩
শুনলাম, তোমরা নাকি তেনাকে দেখেছ!
শুঁড়িপথ পেরোচ্ছিলেন তিনি।
সদ্য শীত গেছে
তাঁর মাথায় স্বয়ং নারায়ণের পদচিহ্ন!
ছোকরা বয়সীদের শুনেছি বিষ বেশী
নতুন দাঁত উঠলে, বাচ্চারা যেমন কামড়াতে চায়
এঁদের সমাজেও কি তাই চলে?
যদিও শঙ্খ লাগার ঋতু এ নয়,
তোমাদের সঙ্গে কি লালশালু রয়েছে?
পাতায় পাতা হয়ে তিনি রোদ পোহাচ্ছেন
ফসিল হওয়ার আগে, শিস শুনে রাখো।
বাংরিপোসিতে দুরাত্তির ৪
আরো কোনো গভীর অরণ্যের খোঁজে আছি।
রাত আরো গভীর হলে, এই স্রোতা শীতলতম হবে ---
মানুষের সংসারে আমি থতমত খেয়ে আছি
আমি ঠিক মানুষ না।
আমার আদিম ক্রোধ আত্মরক্ষার কবচ
আমার জিভের নাম খোলা নর্দমা
আমার সর্বগ্রাসী কামনাবাসনা তমোতম
আমার স্বমেহন উভমুখী পরীক্ষা নিরীক্ষা
ঐ অরণ্যের ডাক, আমি তাই ফেরাতে পারিনা কখনো।
ভুলতে পারিনা মিঠে জলের হ্রদ ও তার লবণ উপত্যকা;
নাভির মতো গভীর খাঁড়ি তার চলে গেছে বরাবর ---
এতদিন অনভ্যাসেও আমার রপ্ত আছে স্খলনহীন সাঁতার!
শুধু এই মানুষ হওয়ার ইতিহাস ভাঙার,
একখানি হাতুড়ি দরকার...
সুন্দর লেখনী
ReplyDelete